
২০২০ সালের আসন্ন ফ্ল্যাগশিপ মোবাইল ফোনগুলো
2019-12-23
অ্যাপল আইফোন ১২
পরবর্তী প্রজন্মের আইফোন নিশ্চিত ভাবেই গ্রাহকদের নজর কাড়বে। আশা করা যাচ্ছে নতুন আইফোনে পাওয়া যাবে ৫জি নেটওয়ার্ক সাপোর্ট। এছাড়াও বাজারে গুজব হয়েছে যে অ্যাপল তাদের নতুন ফোনের জন্য আরো শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেনস (এআই) নিয়ে কাজ করছে। তারা সম্পূর্ণ নতুন এক চিপসেট নিয়ে কাজ করে আসছে যেগুলো এআই প্রযুক্তি সহ কাজ করার ক্ষমতা রাখবে। অ্যাপল এদের নাম দিয়েছে “নতুন প্রজন্মের বায়োনিক চিপস”।
এই বছর আইফোন ১১ -এর এলসিডি স্ক্রিন ডিসপ্লে নিয়ে অনেকেই কিছুটা হতাশ হয়েছেন। আর সেজন্যই অ্যাপল তাদের আইফোন ১২ মডেলটিতে ওএলইডি ডিসপ্লে দেয়ার সম্ভাবনাই অনেক বেশি।
সম্ভাব্য স্পেসিফিকেশনঃ
- প্রসেসর – অ্যাপল এ১৩ বায়োনিক
- অপারেটিং সিস্টেম – আইওএস ভার্সন ১৩.০
- স্টোরেজ – ৬৪ জিবি
- ক্যামেরা – ১২ মেগাপিক্সেল + ১২ মেগাপিক্সেল + ১২ মেগাপিক্সেল
- ব্যাটারি – ৩২১০ এমএএইচ
- ডিসপ্লে – ৫.৪২ ইঞ্চি (১৩.৭৭ সে.মি.)
- র্যাম – ৬ জিবি
- রিলিজ পাওয়ার তারিখ – ২০ মার্চ, ২০২০ (আনুমানিক)
অ্যাপল আইফোন ১০ ফোল্ড
আগামী বছরের মধ্যে খুব শীঘ্রই অ্যাপল একটি ফোল্ডিং ফোন বাজারে নিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও এখন পর্যন্ত এই নিয়ে শুধু জল্পনা কল্পনাই চলছে। এই বছরেই কিছুদিন আগে স্যামসাং, শাওমি ও মটরোলা দু’টো ব্র্যান্ডই এই যুগান্তকারী ডিজাইন নিয়ে নিজ নিজ ভার্সনের ফোন বাজারে নিয়ে এসেছে। গ্রাহকরাও এই ডিজাইন খুব পছন্দ করেছেন। এখন অ্যাপল যদি এই দিকটা মাথায় রেখে অবশেষে নিজেরাও একটা ফোল্ডিং ডিসপ্লে ফোন বাজারে নিয়ে আসে তাহলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
কিছু কিছু ভক্তরা ইতোমধ্যে অ্যাপলের ফোল্ডিং ফোন নিয়ে অফিশিয়াল ঘোষণার দেয়ার পর দেখতে কেমন হবে সেটা অনুমান করে নানা রকম মডেল ডিজাইন চিন্তা করে ফেলেছেন। তবে যাই হোক, এখন পর্যন্ত অ্যাপল ফোল্ডিং ডিসপ্লে সহ মডেলের ব্যাপারে আসলে তেমন কোন ইঙ্গিত দেয় নি।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এস১১
গ্যালাক্সি এস১০ ফোনটির রিলিজ হওয়ার তারিখ দেখে আমরা অনুমান করতে পারছি যে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের আশে পাশে কোন একটা সময়ে তাদের এস১১ মডেলটি বাজারে চলে আসবে।
শোনা যাচ্ছে যে এস১১ ডিভাইসটির স্ক্রিন অনুপাত এর পূর্ববর্তী মডেলগুলোর তুলনায় কিছুটা চওড়া হতে পারে। এস১০ মডেলটির ১৯:৯ অনুপাতের বদলে নতুন মডেলে আরো বড় ২০:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিওর স্ক্রিন চিন্তা করা হচ্ছে। সম্প্রতি একটি ছোট স্ক্রিন ডিজাইনে স্যামসাং-এর পেটেন্ট পাওয়ার কারণে ধারণা করা যাচ্ছে যে এস১১ মডেলটিতে একটি ছোট ব্যাক স্ক্রিন সংযোজন করার কিঞ্চিত সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে পেছনের ক্যামেরা দিয়ে সেলফি তোলা অনেক সহজ হয়ে যাবে। আবার এর থেকে এটাও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে এই মডেল থেকে ফ্রন্ট ক্যামেরা পুরোপুরি বাদ দেয়া হবে। স্যামসাং – এর এই ফ্ল্যাগশিপ ফোনের আনুমানিক স্পেসিফিকেশন গুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- অপারেটিং সিস্টেম – অ্যান্ড্রয়েড ৯.০ (পাই)
- ডিসপ্লে – ৬.৪ ইঞ্চি (১৬.২৬ সে.মি.) পাঞ্চ-হোল ডিসপ্লে সহ বেজেল-লেস ডিসপ্লে
- প্রসেসর – স্যামসাং এক্সিনস ৯ অক্টা ৯৮২০ অক্টা কোর প্রসেসর
- ৮ জিবি র্যাম
- ২৫৬ জিবি অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ
- ক্যামেরা – ১০৮ + ১৩ + ৮ মেগাপিক্সেল ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা
- ব্যাটারি – ৩৭৩০ এমএএইচ
- ডুয়াল স্ট্যান্ডবাই ভিওএলটিই সাপোর্ট সহ ডুয়াল সিম
স্যামসাং গ্যালাক্সি ফোল্ড ২
এই বছর স্যামসাং তাদের যুগান্তকারী ফোল্ডিং ফোনের ডিজাইন দিয়ে গ্রাহকদের বিস্মিত করেছে। মার্কেটে এটা অন্যতম প্রথম ফোল্ডিং স্ক্রিন সেটগুলোর মধ্যে একটি, আর এতে স্বাভাবিকভাবে কিছুটা ঘাটতিও ছিল। কিন্তু তারপরও স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা এই ডিজাইনটি বেশ ভালোভাবেই আপন করে নিয়েছেন। গ্রাহকদের ইতিবাচক নানা রকম মন্তব্য ও মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে স্যামসাং তাদের ফোল্ডিং ফোন ডিজাইনটির আরো উন্নত ভার্সন তৈরি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। খুব সম্ভবত তাদের দ্বিতীয় ফোল্ড ফোনটি ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে বাজারে চলে আসবে।
শোনা যাচ্ছে যে গ্যালাক্সি ফোল্ড ২ ফোনটিতে আনুভূমিক অক্ষ বরাবর একটি ৬.৭ ইঞ্চি স্ক্রিন দেয়া হবে। ঠিক গ্যালাক্সি এস১০ ৫জি ফোনটির মতই, কিন্তু একে ঠিক মাঝখানে অক্ষ বরাবর লম্বালম্বি ভাজ করে ফেলা যাবে, অনেকটা আগের দিনে ফ্লিপ ফোন গুলোর মত। অনেকেই ধারণা করছেন গ্যালাক্সি ফোল্ড ২ সেটটিতে একটি ছোট বাহ্যিক স্ক্রিন সংযোজন করা হবে, যাতে নোটিফিকেশন এবং অন্যান্য তথ্য দেখা যাবে। ছোট ডিসপ্লে স্ক্রিনের উপর স্যামসাং এর সাম্প্রতিক পেটেন্ট পাওয়ার কারণে এই গুজবটা উঠে এসেছে।
মটোরোলা রেজর ২০২০
আজকের দিনের নতুন ফোল্ডিং স্ক্রিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে মটোরোলা তাদের ক্লাসিক মটোরোলা রেজর সেটটিকে পুনরুজ্জীবিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর আপনাদের জন্য তারা নিয়ে এসেছে সম্পূর্ণ নতুন ও আরো উন্নত মটোরোলা রেজর ২০২০। এটি একটি ফোল্ডিং স্মার্টফোন, যা বিস্ময়কর ভাবে দেখতে অনেকটাই এর অ্যানালগ পূর্বসূরির মত। কিন্তু অর্ধেক স্ক্রিন আর অর্ধেক বাটনের বদলে এতে রয়েছে আগা গোড়া সম্পূর্ণ টাচ স্ক্রিন ডিজাইন, আর সাথে রয়েছে একটি আপ-টু-ডেট অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম। যদিও তাদের এই ডিজাইনটির অনেক গুলো ডেমো ইতোমধ্যে বের হয়ে গেছে, তবুও তারা রেজর ২০২০ মডেলটি আগামী বছরেই অফিশিয়াল ভাবে রিলিজ করবে। সেটটির স্পেসিফিকেশন নিম্নরূপঃ
- অপারেটিং সিস্টেম – অ্যান্ড্রয়েড ৯.০ (পাই)
- প্রসেসর – কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৭১০
- ডিসপ্লে (অভ্যন্তরীণ) – ৬.২ ইঞ্চি পি-ওলেড, ২১:৯ এসপেক্ট রেশিও
- ডিসপ্লে (বাহ্যিক) – ২.৭ ইঞ্চি জি-ওলেড, ৪:৩ এসপেক্ট রেশিও
- র্যাম – ৬ জিবি
- অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ – ১২৮ জিবি
- মেইন ক্যামেরা – ১৬ মেগাপিক্সেল
- ব্যাটারি – ২৫১০ এমএএইচ
শাওমি মি ১০
অন্য বিলাসবহুল প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় বেশ সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চতর প্রযুক্তির উদ্ভাবন উপহার দেয়ার কারণে স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতে শাওমি স্মার্টফোন খুব দ্রুত একটি জনপ্রিয় নাম হয়ে উঠেছে। এই কোম্পানিটি প্রতিনিয়তই গ্রাহকদের নতুন ও আরো উন্নত স্মার্টফোন প্রযুক্তি উপহার দেয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আর তাদের সিইও ঘোষণা করে ফেলেছেন যে তারা আসছে বছরে প্রায় ১০টি নতুন ৫জি সাপোর্ট সহ ফোন বাজারে আনার জন্য কাজ করছেন।
২০২০ সালের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে যেসব বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও মডেলের স্মার্টফোন রিলিজ পাওয়ার আশা করা হচ্ছে, শাওমির মি ১০ ফোনটি তাদের মধ্যে একটি। এই ফ্ল্যাগশিপ মডেলটিতে একটি অসামান্য ১০৮ মেগাপিক্সেল রিয়ার ক্যামেরা সংযোজন হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। যা কিনা আজ অবধি যেকোনো ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনের ইতিহাসে এই প্রথম।
সম্ভাব্য স্পেসিফিকেশনঃ
- অপারেটিং সিস্টেম – অ্যান্ড্রয়েড ৯.০ (পাই)
- ডিসপ্লে – ৪ ইঞ্চি স্ক্রিন
- প্রসেসর – অক্টা কোর প্রসেসর
- র্যাম – ৮ জিবি
- স্টোরেজ – ২৫৬ জিবি
- ফ্রন্ট ক্যামেরা – ৩২ মেগাপিক্সেল
- ব্যাটারি – ৫১০০ এমএএইচ
ওয়ান প্লাস ৮
আসছে বছরে ওয়ান প্লাস ৮ ফোনটি রিলিজ হওয়ার ব্যাপারে অনেক রকম গুজব আর খবর আমরা শুনেছি। এই কোম্পানির ঘোষণা করা গতানুগতিক রিলিজের তারিখগুলো লক্ষ্য করলে আন্দাজ করা যায় যে ২০২০ সালে বসন্তের আশেপাশে কোন একটা সময়ে ফোনটি বাজারে চলে আসবে। নিচে ওয়ান প্লাস ৮ ফোনটির আনুমানিক স্পেসিফিকেশন গুলো তুলে ধরছিঃ
- অপারেটিং সিস্টেম – অ্যান্ড্রয়েড ১০.০; অক্সিজেন ওএস ১০.০
- প্রসেসর – অক্টা কোর (১টি ২.৯৬ গিগাহার্জ কায়রো ৪৮৫, ৩টি ২.৪২ গিগাহার্জ কায়রো ৪৮৫ এবং ৪টি ১.৭৮ গিগাহার্জ কায়রো ৪৮৫)
- মাপ – ১৬৫.৩ x ৭৪.৪ x ৮.৮ মিমি (৬.৫১ x ২.৯৩ x ০.৩৫ ইঞ্চি)
- অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ – ১২৮ জিবি
- ৮ জিবি র্যাম
- ডিসপ্লে টাইপ – ফ্লুইড অ্যামোলেড ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন, ১৬ মিলিয়ন কালার
- মেইন ক্যামেরা – ট্রিপল: ৪৮ মেগাপিক্সেল, এফ/১.৬, ৮ মেগাপিক্সেল, এফ/২.৪, ১৬ মেগাপিক্সেল, এফ/২.২, ১৩ মিমি
হুয়াওয়ে নোভা ৬
শোনা যাচ্ছে যে, এই বছরের শেষের দিকে হুয়াওয়ে নোভা ৬ মডেলটি অফিশিয়াল ভাবে ঘোষণা করা হবে। আর আশা করা যাচ্ছে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে এটা বাজারেও চলে আসবে। চাইনিজ মার্কেটে ৪জি এবং ৫জি প্রযুক্তি দু’টো নিয়েই এই ফ্ল্যাগশিপ মডেলটি রিলিজ করা হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। নোভা ৬ -এর আনুমানিক স্পেসিফিকেশন গুলো হতে পারে অনেকটা এরকমঃ
- অপারেটিং সিস্টেম – অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ৯.০ (পাই)
- প্রসেসর – অক্টা কোর (২.৮৬ গিগাহার্জ, ডুয়াল কোর, কর্টেক্স এ৭৬ + ২.৩৬ গিগাহার্জ, ডুয়াল কোর, কর্টেক্স এ৭৬ + ১.৯৫ গিগাহার্জ, কোয়াড কোর, কর্টেক্স এ৫৫)
- চিপসেট – হাই সিলিকন কিরিন ৯৯০ ৫জি
- র্যাম – ৮ জিবি
- অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ – ১২৮ জিবি
- ডিসপ্লে – ৬.৩৯ ইঞ্চি
- ক্যামেরা – ৬০+১৬+২+২ মেগাপিক্সেল
- ব্যাটারি – ৪০০০ এমএএইচ